৭১ এর দিনপঞ্জি
আজ ১৮ই মার্চ-
পূর্ব-সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা প্রত্যেকে আলাদা আলাদা স্থানে অবস্থান নিয়ে তারপর সারারাত ধরে আমারদের এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে পাহারা দেবার কাল্পনিক মহড়া দিবো বলে ঠিক করলাম। দুপুরে বাড়ির পিছনের জঙ্গলে আমাদের গোপন আস্তানায় সকলে নিরবে একত্রিত হয়ে এই অপারেশন সম্পর্কে আমার বইয়ের জ্ঞান উগড়ে দিলাম সবাইকে। শর্ত ছিল যে কেউ টর্চ লাইট না জ্বালিয়ে একে অন্য কাউকে ধরে ফেলব এবং প্রত্যেকে নিজেকে অন্যের হাতে ধরা না পরার চেষ্টা করবো। রাত নামতেই গেরিলা যুদ্ধের নিয়ম অনুযায়ী আত্মগোপন করে রাখা ও শত্রুকে ধরে ফেলার অনুশীলন করার জন্য ছড়িয়ে পরলাম প্রচুর উৎসাহ ও টানটান উত্তেজনা নিয়ে। কিন্তু আমরা সবাই তখনও ভিতুর ডিম, আঁধারে চলাচলের অভ্যাস কোনোকালেই ছিলনা, সকাল হতেই দেখা গেলো বীর যোদ্ধারা সবাই যে যার মতো আমাদের বাড়ির আশেপাশে ঘাপটি মেরে বসে বসে রাত কাটিয়েছে। আজন্ম ভীতু আমি তাদের এককাঠি উপরে ছিলাম - সবাইকে বিদায় দিতেই ভয়ে আমাকে হাতপা কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেলো! আমি নিরবে ঘরে এসে নিজের বিছানায় দিব্বি ঘুমিয়ে পরেছিলাম। ভোর বেলায় উঠে বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে একত্রিত করলাম এবং কাউকে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ না করে ভৎসনা করতেও দ্বিধা করলাম না। সবাই চুপ, আমাদের সমবয়সীদের মধ্যে বিশা ছিল সবচেয়ে সাহসী - কিন্তু সে-ও অনায়াসে জানালো যে সেই রাতে সে অকারণেই ভয় পেয়েছিল।। কথা হলো আজ থেকে একা-একা না, কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে এই অপারেশন চালাবো। কি জানি এভাবেই কি প্রকৃতি আমাদের নতুন করে ভাবনার বিষয় শিখিয়ে দিয়েছিল কিনা !!!
চলমান থাকবে....
বীর মুক্তিযোদ্ধা স্থপতি কাজি নুরুল করিম দিলু এর বীরত্বগাথা প্রোফাইল দেখুন
এই https://mssangsad.com/profile_view/890/66274 লিংকে
বীর মুক্তিযোদ্ধা স্থপতি কাজি নুরুল করিম দিলু এর
ফেসবুক প্রোফাইল দেখুন https://www.facebook.com/architectdilu লিংকে