বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ (বেঙ্গল) | mssangsad.com

মুক্তিযোদ্ধার প্রোফাইল

Visitor: 3388

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ (বেঙ্গল)

মুক্তিযোদ্ধা পরিচিতি নম্বর : মুক্তিযোদ্ধার নম্বরঃ ০১১৫০০০২২৪০
  • পিতার নাম: মৃত হাজী চাঁন মিঞা
  • মাতার নাম: মৃত বেগম খাতুন
  • স্ত্রীর নাম: খুরশিদা বেগম
  • জম্ন তারিখ: ১২.০৩.১৯৫৬ ইং
  • মৃত্যু তারিখ: ***
  • মোবাইল: 01814703809
  • গ্রাম: আধুনগর, খাস মহাল
  • ইউনিয়ন: আধুনগর
  • উপজেলা: লোহাগারা
  • জেলা: চট্টগ্রাম

অন্যান্য তথ্য

মুক্তিবার্তা নম্বর লাল মুক্তিবার্তা ০২০২০১০০০৬
ভারতীয় তালিকা নম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা ২১৬০৬
মুক্তিবার্তা নম্বর লাল মুক্তিবার্তা ০২০২০১০০০৬
বাংলাদেশ গেজেট নম্বর বেসামরিক গেজেট ৩৬৩৭
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান কি না? yes

সন্তানদের নাম ও বয়স

নাম বয়স শিক্ষাগত যোগ্যতা
তাজনিম হামিদ নোভা জন্ম-৩১.১২.১৯৯২ ইং এস.এস.সি
আনিকা হামিদ জন্ম-১৩.০৮.১৯৯৩ ইং এস.এস.সি
তামান্না হামিদ জন্ম-০৪.০২.২০০০ ইং এস.এস.সি
তাসনিয়া হামিদ ঈশিকা জন্ম-০৫.০৫.২০০১ ইং এইচ.এস.সি
ইলিয়াছ হামিদ রাফচাঁন জন্ম-১২.১১.২০০৫ ইং দশম শ্রেণী

যুদ্ধের ইতিহাস

“মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় দিনঘুলি” আব্দুল হামিদ (বেঙ্গল) ভারপ্রাপ্ত কমন্ডার, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধা সংসদ লোহাগাড়া উপজেলা কমান্ডা, চট্টগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে, 69 এর গণভূথানের অন্য দশজন ছাত্রের মতো আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম, 1970 সালে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা ও রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে মাঠে ময়দানে ব্যস্ত ছিলাম। 1971 সালে অসহযোগ থেকে এলাকার ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ে এগিয়ে যাই পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ যখন শরু হয়, পাঞ্জাবীরা পুরা এলাকাগ্রাস করে নেওয়ার পর, তখন দলে দলে যুবকেরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য ভঅরতে চলে যাচ্ছিল। আমিও 15ই এপ্রিল শ্রীনগর সীমান্ত পার হয়ে পরদিন ভারতের মনু বাজারের থানায় পৌছি। সর্বপ্রথম আমাকে হরিনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। দু দিন পর ওখানে থেকে আমি সহ প্রায় 35 জন ছেলেকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো ত্রিপুরা রাজ্যের শেষ সীমানায় ওমপি নগর ক্যাম্পে। এই টাই আমরাই 1ম ব্যাচ আমাদের দিয়ে ইকু কোম্পানী গঠন করে। তার আগে যে কটি কোম্পানী গঠিত হয়ে ছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলফা, ভ্রেবু, ছাল্লি ও ডেলটা, ইকু, এভাবে প্রায় দু’মাস ট্রেনিং শেষে আমাদেরকে হরিনা ক্যাম্পে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়। ওখান থেকে ক্যাপটেন মতিয়র রহমান (সেনাবাহিনী) ও ক্যাপটেন অলি আহমদ (বর্তমানে অর্ণেল অলি বীর বিক্রম) সহ আমরা 35 জনের একটি গ্রুপকে দুই ভাগে বিভক্ত করে জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে নোয়াখালী (বর্তমানে ফেনী জেলার) ছাগল নাইয়ার থানার মিদ্ধার বাজার প্রেরণ করে, ওখানে প্রায় 200 জন সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সমন্বয়ে সম্মুখ যুদ্ধে 15দিন শক্র নিধনে ব্যস্ত ছিলাম। একটা ট্রুপস এর মুখা মুখি আক্রমন পাল্টা আক্রমনের মাধ্যমে আমাদের অবস্থান সুদৃঢ় হওয়াতে আমরা ঐ ট্রুপসটা সম্পূর্ণ ধ্বংস করিতে সমর্থ হয়েছিলাম। তারপর আমরা আবার হরিনা ক্যাম্পে ফেরৎ আসি। জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ক্যাপটেন মাহফুজ বীর উত্তর এর নেতৃত্বে সাবরুম বর্ডারে রানির হাট চা বাগানে ক্যাম্প স্থাপন করি। আমাদের মূল কাজ ছিল, বর্ডারে নির্মিত সীমান্ত চৌকিগুলোতে আক্রমন করা এবং নিরাপদ অবস্থানের মাধ্যমে চৌকি ধ্বংস করে ভারতে চলে যাওয়া, এভাবে 14ই আগষ্ট (পাকিস্তানের স্বাধীনতার দিবসে দিন) রাত্রে আমরা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে, আমরা একটা ব্রীজ, একটা এলেক্ট্রিক টাওয়ার এবং গুরুত্বপূর্ণ বর্ডার চৌকি ধ্বংস করি তার কয়েকদিন পর আমাদের ওখান থেকে প্রত্যাহার করে ফেরৎ নিয়ে এলো পুনরায় হরিণা ক্যম্পে। সেপ্টেম্বর এর মাঝামাঝি সময়ে আমাদের 85 গেরিলা তপন ও হামিদ গ্রুপ (সাতকানিয়া 1ম গ্রুপ) নিয়ে সাবরুম বর্ডার ক্রস করে ফটিকছড়ি এসে পৌছি, তার দু’দিন পর রাউজান অবস্থান করি। এইভাবে রাগুনিয়া, বোয়ালখালী একটি গ্রুপ সহ শ্রীপুরে সেনের বাড়ীতে উঠি, পরদিন একজন গাইডার সহ আমাদের পৌছাইয়া দিল ধলঘাট সেনের বাড়ীতে, ওখানে থেকে ফেরদাউস ইসলাম খান ও মোজাহেরুল হক আমাদের বরকল শাহ্ জাহান ইসলাবাদীর ক্যাম্পে উঠি এরপর আমরা থানা ওপারেশনে অংশ নিই ভোর 4টা থেকে সকাল 6টা পর্যন্ত যুদ্ধ করে তাদের পরাস্থ করি, ঐ থানার সব রাজাকার ও পাকিস্তানি মিলুশিয়াদের বন্দি করে তাদের অস্ত্র গুলো সহ আমরা বাশখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করি এবং সন্ধ্যায় বাশখালীর কুন্ড ষ্টেটে পৌছি। ঐখানে কিছু দিন অপেক্ষা করে আবার চলে গেলাম চান্দনাইশের ধুপাছড়ির উদ্দেশ্যে আমরা সুলতান আহাম্মদ কুসুমপুরী ক্যাম্পে গিয়া উঠি। এর তিন দিন পর পাঞ্জাবীরা ধুয়াছড়িতে গিয়ে পৌছলে আমরা তাদের প্রতিহত করি। তারা পিছু হটে চলে যাওয়ায় আমরা ভারতের উদ্দেশ্যে ধুয়াছড়ি ত্যাগ করি, কারণ আমাদের আর্মস ও এমুনিশান (গোলাবারুত) কমে যাওয়াতে আর্মস এমুনিশান এর জন্য ভারতে যেতে হলো, পথের মধ্যে জালিয়াপাড়া (নয়াপতং) পরোয়া সম্মুখ রুদ্ধে টি.এম. আলী নিহত হন। হাবিলদার আবু ইসলাম, সুলতান আহমদকে (কুমুমপুরী এম.এন.এ) আহত অবস্থায় নিয়ে বাশখালীর আবদুল রহমান চৌধুরীর ক্যাম্পে উঠি (জারুল ছড়ি) পরবর্তীতে মুজিব নগর প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য দেমাঘ্রী ( মিজুরাম ভারত ) গিয়া তদানিন্তন এম.এন এ সাতকানিয়া জনাব আবু ছালেহ সাহেবের সাথে যোগাযোগ হয়। তারপর ভরতীয় মিত্র, তিব্বত ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডে যুদ্ধে অংশ নিই পরোয়া ও বরকলের মতো বড় বড় গুলোতে। কুসমপুরী সাহেবের আলফা গ্রুপ আর জৈলান্দ সিং (ভারতীয় মিত্র বাহিনী) ও এস, কে কুইয়ান ক্যাপটিন নারায়ন (মিত্র বাহিনী) এর নেতৃত্বে । মিত্র বাহিনীর সদস্যরা ডেল্টাগ্রুপের সদস্য হিসাবে আমরা অন্তর্ভূক্ত ছিলাম। আমরা যখন পরোয়তা জয় করে বরকলের উদ্দেশ্যে একদিন চলার পর হঠাৎ উপরের নির্দেশে আমাদের যাত্রা বিরতি হলো। কারণ বরকলের মতো সামরিক ঘাঁটি উৎখাকত করতে হলে, বিমান হামলা অপরিহার্য ছিল। তাই পরদিন সকালে দুটি বিমান দম দম বিমান ঘাটি থেকেি এসে বার বার আক্রমন শুরু করে বরকল সামরিক ঘাটিতে পাঞ্জাবীদের দারুন ক্ষতি করে। পরদিন আমাদের আক্রমনে মরার উপর খরার মত, তারপরও সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে সন্ধ্যার বেশ আগেই সাদা পতাকা তুলে পরাজয় স্বীকার করে নিল, আমরা ঐ ঘাটি দখল করি। পরদিন শুভলং হয়ে রাঙামাটির উদ্দেশ্যে স্টিমার যোগ যাত্র শুরু করি। দু’টার সময় রাঙামাটিতে পৌছলে রাঙামাটির জনসাধারণের পক্ষ থেকে এস.ডি.ও এস.টি ইমাম সাহেব ও রাণী বিনিতা রায় লঞ্জস ঘাটে আমাদের স্বাগম জানান এবং মিত্র ও মুক্তি বাহিনী যৌথভাবে রাঙামাটি সার্কিট হাউস ময়দানে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করি। তারপর অস্ত্র জামা দিয়ে নিজের এলাকায় ফিরে এসে পুরো বাঙালী সমাজে আনন্দের সাথে মিশে গেলাম। “জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ”

আরও ছবি

ভিডিও