৭১ এর এই দিনে | mssangsad.com

৭১ এর এই দিনে

০৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ এই দিনে

***

০৩ ডিসেম্বর ১৯৭১: পাকিস্তানের আক্রমণ ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিহত করতে হবে

 

পাকিস্তানের আক্রমণ ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিহত করতে হবে। ফাইল ছবি

পাকিস্তানের আক্রমণ ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিহত করতে হবে। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরিচয়ে মাথা তুলে দাঁড়াবার চূড়ান্ত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। সেই অনন্য অর্জন অন্যদিকে এই ডিসেম্বর স্বজন হারানোর মাস। ৩০ লাখ প্রাণ ও অসংখ্য নারীর সম্ভ্রম হারানোর বেদনা মিশে আছে এই বিজয়ের ক্ষণে।

জাতির জীবনে আবারো এসেছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। কোটি মানুষের হৃদয়ে এই ডিসেম্বর আসে প্রেরণা, প্রতিজ্ঞার বার্তা নিয়ে। প্রতিকূল পরিস্থিতিকে পরাজিত করে সুন্দর, সত্যের পথে লড়াইয়ের সঞ্জীবনী শক্তি লুকিয়ে রয়েছে এই ডিসেম্বরে। আজ ০৩ ডিসেম্বর। 

১৯৭১ সালের ০৩ ডিসেম্বর দিনটি ছিল শুক্রবার। এই দিন পাকিস্তানী বাহিনী আকস্মিকভাবে স্থল ও আকাশ-পথে ভারতের পশ্চিমাঞ্চল আক্রমন করার ফলে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়।

ভারত ও বাংলাদেশ বাহিনী সম্মিলিভাবে পূর্ব সীমান্তে অভিযান শুরু করে। ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের পাক অবস্থান গুলোকে ঘিরে ফেলার প্রচেষ্টায় সীমান্তের ৭টি এলাকা দিয়ে প্রচন্ড আক্রমণ পরিচালনা করে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী কলকাতা সফরকালে ব্রিগেড প্যারেড ময়দানের সভা সংক্ষেপ করে 
সন্ধ্যায় হঠাৎ দিল্লী রওয়ানা হন। রাতে জাতির উদ্দেশে এক বেতার ভাষণে তিনি বলেন, পাকিস্তান আজ ভারতের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তানের আক্রমণ ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিহত করতে হবে। তিনি দেশবাসীকে চরম ত্যাগ স্বীকারের জন্য তৈরি হবার আহ্বান জানান।

পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে পিআইএর সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়। সামরিক কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ঢাকায় সান্ধ্য আইন জারী ও নিষ্প্রদীপ ব্যবস্থা পালনের নির্দেশ দেয়।

মার্কিন সিনেটর উইলিয়াম স্যাক্সবি রাওয়ালপিন্ডিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে বলেন, তিনি বেআইনী ঘোষিত আওয়ামীলীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনাকালে শেখ মুজিবুর রহমান প্রসঙ্গ নিয়ে কথাবার্তা হয়। তিনি শেখ মুজিবের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য পুনরায় পাকিস্তান আসতে রাজী হয়েছেন।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং নয়াদিল্লীতে পার্লামেন্টে বলেন, বাংলদেশে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্যাতন বন্ধ করার ব্যাপারে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য ভারত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য সরকারকে পরামর্শ দিয়ে আসছে। কিন্তু সে প্রচেষ্টা কোনো সুফল বয়ে আনেনি। বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী আগমনে ও ভারত সীমান্তে পাকিস্তানী গোলাবর্ষণে ভারতের নিরাপত্তা বিপদসঙ্কুল হয়ে পড়েছে।

৪র্থ ও দশম বেঙ্গল ফেনী থেকে অগ্রসর হয়ে রেজুমিয়া সেতুতে উপস্থিত হয়। ১ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন মাহফুজ তাঁর বাহিনী নিয়ে অপর বাহিনীর সাথে একত্র হয়। ফেনী-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়ে এই যৌথবাহিনীর একটি কলাম ডান দিকে মুহুরি নদী ধরে এবং অপর কলাম বাঁ দিকে সড়ক ধরে চট্টগ্রামের দিকে এগুতে থাকে।