১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ এই দিনে
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ১৮ সেপ্টেম্বর গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল একটি দিন। এদিন বিশ্বখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও প্রত্নতত্ত্ববিদ অঁদ্রে মালরো ফ্রান্সের সরকারি রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে অংশ নিতে ফ্রান্স ও ইউরোপের নানা প্রান্ত থেকে বহু তরুণ আমাকে চিঠি দিয়েছে। এরই মধ্যে ১৫০ তরুণকে নিয়ে আমরা একটি টিম গঠন করেছি যারা বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশ নিয়ে সামরিক জান্তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
১৮ সেপ্টেম্বর রাতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঘোষণা করেন, 'ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্র জাতীয় পরিষদে পেশ করা হবে এবং জাতীয় পরিষদ তা সংশোধন করতে পারবে।'
ভারতে এদিন
১৮ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ সমস্যার সন্তোষজনক সমাধানের লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সবকটি দেশ বাংলাদেশের জনগণের মুক্তিসংগ্রাম সমর্থন করেন। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ড ও ভারতে শরণার্থীদের আশ্রয়দানকে তারা অভিনন্দন জানান। সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহযোগিতা প্রদানেরও আশ্বাস দেয়। এদিন নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বি পি কৈরালা ও ভারতের সর্বোদয় নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ একটি আন্তর্জাতিক ব্রিগেড গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
পাকিস্তানে এদিন
১৮ সেপ্টেম্বর করাচিতে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিবি) প্রধান নুরুল আমিন। একই দিন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গেও বৈঠক করেন জুলফিকার আলী ভুট্টো।
আন্তর্জাতিক মহলে এদিন
১৮ সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের লিবারেল পার্টির বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতায় দলটির নেতা ও হাউস অব কমন্সের সদস্য জেরেমি থর্প বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন করার জন্য ব্রিটেনের প্রতি জোরালো আবেদন জানান। এসময় তিনি বলেন, 'আত্মঘাতী ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক কাঠামো বজায় রাখা সম্ভব নয়। আমরা অসহায় মানুষের পাশে সবসময়ই আছি।
১৮ সেপ্টেম্বর লন্ডনে শরণার্থীদের সাহায্যার্থে এক পপ সংগীত উৎসবে আয়োজকেরা ঘোষণা দিয়ে বলেন, 'এই উৎসব থেকে টিকেট বিক্রি থেকে প্রাপ্ত সব টাকা শরণার্থীদের জন্য পাঠানো হবে।'
দেশব্যাপী গণহত্যা
কৃষ্ণপুর গণহত্যা
১৮ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জের লাখাই ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি দল পৈশাচিক কায়দায় গণহত্যা চালায়। এই গণহত্যায় ১২৭ জন নিরীহ বাঙালি শহীদ হন।
গণহত্যার দুই দিন আগে ১৬ সেপ্টেম্বর, রাজাকাররা গভীর রাতে নৌকা নিয়ে গ্রামটিতে এসে সারা গ্রাম ঘিরে ফেলে। ১৮ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টার দিকে পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ক্যাম্প থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি দল দুটি স্পিডবোটে করে কৃষ্ণপুর গ্রামে আসে। স্পিডবোটগুলো থেকে হানাদারেরা নেমে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে গ্রামে ঢুকেই নির্বিচারে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। ওই সময়ে রাজাকারেরাও গ্রামের চারপাশ থেকে গুলি চালাতে থাকে এবং গ্রামে লুটপাট শুরু করে। লুটপাটের পর হানাদার ও রাজাকারেরা ১৩০ জন নিরীহ মানুষকে কমলাময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। এরপর রাজাকারেরা শহীদদের লাশ পার্শ্ববর্তী বলভদ্রা নদীতে ভাসিয়ে দেয় এবং গান পাউডার দিয়ে গ্রামের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেন।
চণ্ডীপুর গণহত্যা
১৮ সেপ্টেম্বর হানাদারেরা রাজাকারদের সহযোগিতায় কৃষ্ণপুরে পৈশাচিক গণহত্যা চালানোর পর পার্শ্ববর্তী চণ্ডীপুরে যায়। এই গ্রামে মাত্র ১৬টি পরিবার বসবাস করতো। এসময় গ্রামের বাসিন্দাদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হানাদার বাহিনী। এসময় ২ জন গ্রামবাসী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
লালচাঁদপুর গণহত্যা
১৮ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জের লালচাঁদপুর এলাকায় স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় হানাদারেরা মধু নমঃশূদ্রের বাড়িতে প্রবেশ করে ৪০ জন সনাতন ধর্মাবলম্বীকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে বেঁধে রেখে গোটা বাড়িতে লুটপাট চালায়। এরপর বেঁধে রাখা ৪০ জন সনাতন ধর্মাবলম্বীকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। তারপর গান পাউডার দিয়ে গোটা বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
দেশব্যাপী প্রতিরোধ যুদ্ধ
১৮ সেপ্টেম্বর সিলেটে মুক্তিবাহিনীর একটি দল সুতারকান্দি গোয়ালীপাড়ায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমণ হামলা চালায়। এসময় ২ হানাদার সেনা নিহত হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ২ নম্বর সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর টহলদার দল চারগাছা বাজারের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি টহলদার দলকে অ্যামবুশ করে। এই অ্যামবুশে ২০ জন হানাদার সেনা হতাহত হয়। এ সংবাদ পেয়ে হানাদার বাহিনীর একটি শক্তিশালী দল তিন নৌকা বোঝাই করে রাজাকারদের সহযোগিতায় অগ্রসর হলে গোপন খবরের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পৌঁছনোর আগেই শিরাইলের কাছে অ্যামবুশ করে দুটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়। এসময় নৌকায় থাকা বেশিরভাগ হানাদার সৈন্য নিহত হয়। এই যুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
১৮ সেপ্টেম্বর সিলেটের শাহবাজপুর চা বাগানে মুক্তিবাহিনীর একটি গেরিলা দল টহলরত পাকিস্তানি হানাদার সৈন্যদের উপর হামলা চালায়। এসময় মুক্তিবাহিনীর অপর দুটি গেরিলাদল সরাপাড়ের হানাদার বাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সোনাই নদীতে ফেলে আসা একটি ২ ইঞ্চি মর্টার, দুটি এসএলআর ও দুটি ৩০৩ রাইফেল উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
১৮ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের হিলিতে ৭ নম্বর সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ইপিআর কমান্ডার সালেক বেঙ্গল রেজিমেন্টের মান্নান, ঢাকা পুলিশের হাবিলদার রজব আলী এবং ছাত্র রঞ্জিত কুমার মহন্ত, প্রদীপ কুমার করসহ একটি গেরিলাদলের সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের পেতে রাখা মাইনে একটি জিপসহ বহু হানাদার সৈন্য হতাহত হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের বান্দিয়া এলাকায় মুক্তিবাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার মোমতাজউদ্দিন খানের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর একটি দলের সঙ্গে রাজাকারদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। প্রায় ৪ ঘণ্টা ব্যাপী এই যুদ্ধে ১২ রাজাকার নিহত হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের গৌরাঙ্গপাড়ায় মুক্তিবাহিনীর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থানের উপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এসময় বেশ কয়েকজন হানাদার সৈন্য নিহত হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মুক্তিবাহিনীর ফিলিপসের নেতৃত্বে স্থাপিত মাইন বিস্ফোরণে হানাদার বাহিনীর একটি বেডফোর্ড গাড়ি ধ্বংস হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর ফারসিপাড়ায় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর তুমুল যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ৫ জন হানাদার সেনা নিহত হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর সিলেটের জৈন্তাপুরে মুক্তিবাহিনীর হামলায় ২ হানাদার সৈন্য নিহত হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জে একটি গেরিলাদল লৌহজং থানার কাছে লৌহজং থেকে নারায়ণগঞ্জগামী কয়েক হাজার মণ পাটসহ কয়েকটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়।
১৮ সেপ্টেম্বর যশোরের টুঙ্গী এলাকায় মুক্তিবাহিনীর একটি দল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এই হামলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি বাঙ্কার ধ্বংস হয়। এসময় হানাদার বাহিনীর ২ সৈন্য নিহত হয়।
১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১: গেরিলাদল শিরাইলের কাছে অ্যামবুশ করে দুটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়
ফাইল ছবি
১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল শনিবার। সিলেটে মুক্তিবাহিনী সুতারকান্দি গোয়ালীপাড়ার পাকঘাঁটির উপর ২” মর্টার ও এলএমজিসহ আক্রমণ করে। পাকসেনারা পাল্টা ৩” মর্টার ও মেশিনগানের সাহায্যে প্রতিরোধ করলে উভয়পক্ষের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ২ জন সৈন্য নিহত হয়। শাহবাজপুর চা বাগানে টহলরত পাকসেনাদের উপর মুক্তিযোদ্ধারা আকস্মিক হামলা চ্যালায়।
অপর দুটি গেরিলাদল সরাপাড়ের পাক নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সোনাই নদীতে ফেলে আসা একটি ২” মর্টার, দুটি এসএলআর ও দুটি ৩০৩ রাইফেল উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ২ নম্বর সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর টহলদার দল কসবার চারগাছা বাজারের কাছে পাকবাহিনীর একটি টহলদার দলকে অ্যামবুশ করে। এই অ্যামবুশে ২০ জন পাকসেনা হতাহত হয়। এ সংবাদ পেয়ে পাকসেনাদের একটি শক্তিশালী দল তিন নৌকা বোঝাই করে পাকসেনাদলের সাহায্যার্থে অগ্রসর হয়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পৌঁছনোর আগেই শিরাইলের কাছে অ্যামবুশ করে দুটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়। এতে নৌকা দুটির অধিকাংশ পাকসেনা নিহত হয়। এই সংঘর্ষে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন।
কোম্পানি কমান্ডার মোমতাজউদ্দিন খানের নেতৃত্বে ময়মনসিংহের বান্দিয়া এলাকায় রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের ৪ ঘন্টাব্যাপী লড়াই হয়। গুলি বিনিময়ে ১২ জন রাজাকার নিহত হয়। চট্টগ্রামের গৌরাঙ্গপাড়ার পাক অবস্থানের উপর মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এতে কয়েকজন পাকসৈন্য নিহত হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের বড়পঞ্জি ক্যাম্পের উপর গভীর রাতে পাকসৈন্যরা প্রায় ২৫ রাউন্ড ১০৫ এমএম শেল নিক্ষেপ করে। পূর্ব সতর্কতার কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। ঘোড়াঘাটের ফিলিপসের নেতৃত্বে স্থাপিত মাইন বিস্ফোরণে পাকসেনাদের একটি বেডফোর্ড গাড়ী ধ্বংস হয়। ৭ নম্বর সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ইপিআর কমান্ডার সালেক বেঙ্গল রেজিমেন্টের মান্নান, ঢাকা পুলিশের হাবিলদার রজব আলী এবং ছাত্র রঞ্জিত কুমার মহন্ত, প্রদীপ কুমার করসহ একটি গেরিলাদল হিলির কাছে পাকসেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের পেতে রাখা মাইনে একটি জিপসহ বহু পাকসৈন্য হতাহত হয়।
রাজশাহীর ফারসিপাড়ায় মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৫ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনী কোনো ক্ষতি ছাড়াই নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে। মুক্তিবাহিনী যশোরের টুঙ্গী এলাকায় পাকবাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকসেনাদের একটি বাঙ্কার ধ্বংস হয়। এবং ২ জন পাকসেনা নিহত হয়। সিলেটের জৈন্তাপুরে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালালে ২ জন পাকসেনা নিহত হয়। ঢাকার একটি গেরিলাদল লৌহজং থানার কাছে লৌহজং থেকে নারায়ণগঞ্জগামী কয়েক হাজার মণ পাটসহ কয়েকটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ প্রশ্নে আলোচনার জন্য বিশ্বের ২৪টি দেশ থেকে ১৫০ জন প্রতিনিধি দিল্লী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে বাংলাদেশ সমস্যার সন্তোষজনক সমাধানের লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সবক’টি দেশ বাংলাদেশের জনগণের মুক্তিসংগ্রাম সমর্থন করেন। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ড ও ভারতে শরণার্থীদের আশ্রয়দানকে তারা অভিনন্দন জানান। সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহযোগিতা প্রদানেরও আশ্বাস দেয়।
রাতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ঘোষণা করেন, ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্র জাতীয় পরিষদে পেশ করা হবে এবং জাতীয় পরিষদ তা সংশোধন করতে পারবে।
পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমীর গোলাম আযম নতুন প্রাদেশিক মন্ত্রীসভাকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এই সংকটকালে মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করে মন্ত্রীসভার সদস্যরা শুধু যে বিপদের ঝুঁকি নিয়েছেন তাই নয়, তারা পাকিস্তানের শত্রুদের (মুক্তিবাহিনী) নির্মুল করার কাজে নিয়োজিত পাকিস্তানের বীর সেনাবাহিনীর প্রতি হতাশ ও আকাঙ্ক্ষিত মানুষের মধ্যে আস্থার ভাব ফিরিয়ে আনারও গুরুদায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
পিডিপি প্রধান নুরুল আমিন ও পিপিপি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচীতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে পৃথক পৃথক আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন।