১৪ আগষ্ট ১৯৭১ এই দিনে
পাকহানাদারদের একটি দল ঘোড়াশালের কাছে ঝিনারদি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে একটি গ্রামে লুটতরাজ করতে এলে মুক্তিবাহিনীর একদল গেরিলা যোদ্ধা তাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। পাকসেনারা প্রায় তিনঘন্টা যুদ্ধের পর দুটি মৃতদেহ ও কয়েকটি আহত সৈন্যকে ফেলে নরসিংদির দিকে পালিয়ে যায়।
মুক্তিবাহিনী কোম্পানীগঞ্জ থানার বসুরহাটের কাছে পাকমিলিশিয়াদের ওপর এ্যামবুশ করে। এতে একটি টয়োটা জীপ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়এবং ৩০ জন মিলিশিয়া হতাহত হয়। এই সংঘর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাই নুরুন্নবী মারাত্মকভাবে আহত হন।
মহাদেবপুর থানার হাপুনিয়া মহাসড়কে মুক্তিবাহিনীর পুঁতে রাখা একটি শক্তিশালী ডিনামাইটের বিস্ফোরণে হানাদার বাহিনীর একটি জীপ ধ্বংস হয়। এতে পাকহানাদারদের ৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
৭নং সেক্টরের মেহেদিপুর সাব-সেক্টরে সুবেদার মেজর মজিদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল পাকহানাদারদের কানসাট অবস্থানের ওপর মর্টার আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয়।
ইলিয়াসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল মীরেরশ্বরাই হয়ে চট্টগ্রাম শহরে আসার পথে মিয়াজান ঘাটে পাকসেনাদের সাথে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই যুদ্ধে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয় ও অনেক আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা অক্ষত অবস্থায় নিজ অবস্থানে চলে আসে।
কুমিল্লার মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর মাঝিগাছা অবস্থানের ওপর আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনীর এই সফল আক্রমণে পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্য নিহত হয় ও অনেক আহত হয়।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে এম ভি হরমুজ ৯,৯১০ মেট্রিক টন সমর-সম্ভার, এম বি আল আব্বাস ১০,৪১০ টন সামরিক সরঞ্জাম ও ওরিয়েন্ট বার্জ ২৭৬ টন অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদসহ যথাক্রমে ১৩,১২ ও মংলা বন্দরের জেটিতে অবস্থান করে। বাংলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাহাজ তিনটিতে লিমপেট মাইন লাগিয়ে নিঃশব্দে নদীর ভাটিতে ভেসে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। পরে একের পর এক মাইন বিস্ফোরণে জাহাজ তিনটিসহ পার্শ্ববর্তী অনেক জাহাজ বিধ্বস্ত হয় এবং পানিতে ডুবে যায়।
পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে ঢাকায় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রাদেশিক জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম বলেন, এবার শুধু তারাই স্বাধীনতা দিবস পালন করছে যারা পাকিস্তানকে প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসে। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ঘরে-বাইরে শত্রুর অভাব নেই। তবু একথা একশ ভাগ সত্য, পাকিস্তান টিকে থাকার জন্যই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা পাকিস্তানকে অখন্ড রাখার জন্য সংগ্রাম করছি। এদেশ টিকে না থাকলে আমাদের মুসলমান হিসেবে টিকে থাকা মুশকিল হবে।
নওগাঁয় ১৮ জন কৃষককে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্র্যাশ ফায়ার করে হানাদাররা
হানাদাররা গ্রামের মানুষদের ব্র্যাশ ফায়ার করে হত্যা করে। ফাইল ছবি
১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট দিনটি ছিল শনিবার। এদিন পাকহানাদারদের একটি দল ঘোড়াশালের কাছে ঝিনারদি রেলওয়ে স্টেশনের নিকটবর্তী একটি গ্রামে লুটতরাজ করতে এলে মুক্তিবাহিনীর একদল গেরিলা তাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। পাকসেনারা প্রায় তিনঘন্টা যুদ্ধের পর দুটি মৃতদেহ ও কয়েকটি আহত সৈন্যকে ফেলে নরসিংদির দিকে পালিয়ে যায়।
এদিকে জার্মান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকের (পূর্ব জার্মানী) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক আদালতের নেয়া পদক্ষেপে তার দেশের উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেন, জিডিআরের জনগণ পাকিস্তান সরকারের কাছে জনগণের নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ন্যায়বিচার, মানবিকতা ও শ্রদ্ধা জানানোর আবেদন জানাচ্ছে। জিডিআরের জনগণ পাকিস্তানের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সামরিক আদালতের বিচারকার্য বন্ধ করার মাধ্যমে পাকিস্তানে বিদ্যমান সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধান বের করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়।
নওগাঁর ধামইরহাটের সীমান্তবর্তী কুলফৎপুর গ্রামে পাকহানাদারবাহিনী ১৮ জন কৃষককে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্র্যাশ ফায়ার করে। ঘটনাস্থলেই ১৪ জন কৃষক শহিদ হলেন, তজুমুদ্দীন, বিজুমুদ্দীন, আব্বাস আলী, রহিমউদ্দীন, ফয়জুল ইসলাম,আফতাবউদ্দীন, তায়েজউদ্দীন, ছয়েফউদ্দীন, কছিমুদ্দীন, আমজাদ হোসেন, চানমুদ্দীন, অবিরউদ্দীন, মতিবুল ইসলাম ও আবেদ আলী। ঘটনাক্রমে চারজন প্রাণে বেঁচে যান। হানদাররা চলে গেলে গ্রামবাসী ১২ জন শহীদকে কালাহারের পুকুর পাড়ে কবর দেয়। অন্য দুইজন শহিদকে গ্রামের উত্তর পাড়ায় কবর দেয়া হয়।
মুক্তিবাহিনী কোম্পানীগঞ্জ থানার বসুরহাটের কাছে পাকমিলিশিয়াদের ওপর অ্যামবুশ করে। এতে একটি জীপ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় এবং ৩০ জন মিলিশিয়া হতাহত হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধা সিপাই নুরুন্নবী মারাত্মকভাবে আহত হন।
মহাদেবপুরের হাপুনিয়া মহাসড়কে মুক্তিবাহিনীর পেতে রাখা একটি শক্তিশালী ডিনামাইটের বিস্ফোরণে হানাদারবাহিনীর একটি জীপ ধ্বংস হয়। এতে পাকহানাদারদের ৫ জন সৈন্য নিহত হয়। ৭ নম্বর সেক্টরের মেহেদিপুর সাব-সেক্টরে সুবেদার মেজর মজিদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল পাকহানাদারদের কানসাট অবস্থানের ওপর মর্টার আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয়।
ইলিয়াসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল মীরেশ্বরাই হয়ে চট্টগ্রাম শহরে আসার পথে মিয়াজান ঘাটে পাকসেনাদের সাথে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই যুদ্ধে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয় ও অনেক আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা অক্ষত অবস্থায় নিজ অবস্থানে চলে আসে। কুমিল্লার মুক্তিবাহিনী মাঝিগাছায় অবস্থানরত পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনীর এই সফল আক্রমণে পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্য নিহত হয় ও অনেক আহত হয়।
পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে ঢাকায় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রাদেশিক জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আজম বলেন, এবার শুধু তারাই স্বাধীনতা দিবস পালন করছে যারা পাকিস্তানকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ঘরে-বাইরে শত্রুর অভাব নেই। তবু একথা একশ ভাগ সত্য, পাকিস্তান টিকে থাকার জন্যই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা পাকিস্তানকে অখন্ড রাখার জন্য সংগ্রাম করছি। এদেশ টিকে না থাকলে আমাদের মুসলমান হিসেবে টিকে থাকা মুশকিল হবে।