৭১ এর এই দিনে | mssangsad.com

৭১ এর এই দিনে

১৮ জুন ১৯৭১ এই দিনে

* লে. হুমায়ুনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল কুমিল্লা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কে পাকসেনাদের সাইদাবাদ (কামান ঘাঁটি) অবস্থানের পিছনদিক থেকে অনুপ্রবেশ করে অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। কয়েক ঘন্টা যুদ্ধের পর পাকসেনারা তিনটি জঙ্গী বিমানের সহায়তায় পাল্টা আক্রমণ জোরদার করে। আক্রমণ শেষে মুক্তিযোদ্ধাদল গ্রামের গোপন পথে মেঘনার দিকে পশ্চাদপসরণ করে। এ যুদ্ধে ৫০/৬০ জন পাকসেনা হতাহত হয় ও তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

* কুমিল্লার মুক্তিবাহিনীর কৈখোলা অবস্থানের ওপর পাকসেনারা গোলন্দাজ বাহিনীর সাহায্যে প্রচন্ড আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে কৈখোলা পাকসেনাদের দখলে চলে যায়। রাতে মেজর সালেক চৌধুরীর নেতৃত্বে চতুর্থ বেঙ্গলের 'এ' কোম্পানি কৈখোলায় অবস্থানরত পাকসেনাদের আক্রমণ করে। এছাড়া হাবিলদার সালামের প্লাটুন শিবপুরের দিক থেকে এবং সুবেদার আবদুল হক ভুঁইয়ার প্লাটুন দক্ষিণ দিক থেকে শত্রুসেনাদের অবস্থানের ভিতর অনুপ্রবেশ করে। দুঘন্টা ব্যাপী তীব্র যুদ্ধের পর পাকসেনারা কৈখোলা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করে এবং মুক্তিবাহিনী কৈখোলায় তাঁদের দখল পুনঃস্থাপন করে। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর একজন জেসিওসহ ৩১ জন সৈন্য হতাহত হয় । মুক্তিযোদ্ধারা অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জাম দখল করে।

* মিয়াবাজারের দক্ষিণে মুক্তিবাহিনীর এক প্লাটুন যোদ্ধা পাকসেনাদের দুটি বাঙ্কারের ওপর আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়।

* কুমিল্লায় একদল মুক্তিযোদ্ধা খিলা রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পাকসেনাদের একটি জিপকে এ্যামবুশ করে। এ অভিযানে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়।

* দিনাজপুর জেলার ঠনঠনিয়াপাড়ায় পাক অবস্থানের ওপর মুক্তিবাহিনী বড় রকমের হামলা চালায়। আধঘন্টা ভয়াবহ সম্মুখ যুদ্ধের পর পাকসেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং ঠনঠনিয়া মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ১৫ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। অপরদিকে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ২ জন আহত হয়।

* মুক্তিবাহিনীর লে. ইমামুজ্জামানের কোম্পানি বেলোনিয়ার চিতলিয়া অবস্থানের ওপর পাকিস্থান বাহিনী হেলিকপ্টারযোগে ব্যাপক হামলা চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধারা অন্যত্র সরে পড়ে।

* বাগেরহাট সদরের কান্দাপাড়া বাজারে পাকবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। এখানে পাকবাহিনীর দোসর রাজাকাররা ১৮ জন যুবক, ৩ জন বৃদ্ধ ও ২ জন শিশুকে জবাই করে মাথাগুলো বিচ্ছিন্ন করে লাশের বুকের ওপর রেখে রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখে।

* মৌলভীবাজারে পাকবাহিনীর জুড়ি অবসাথানের ওপর মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর ২৫ জন সিপাই নিহত হয় এবং ৯ জন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দী হয়।

* পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল দেশত্যাগী পাকিস্তানির প্রতি স্বদেশ ফিরে আসার আবেদন জানান।

* প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী, বিচারপতি নূরুল ইসলাম, ডেমোক্রেটিক পার্টির সহ-সভাপতি মাহমুদ আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কাজী দীন মোহাম্মদ 'পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি' হিসেবে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে রাওয়ালপিন্ডিতে সাক্ষাৎ করেন।

* পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম লাহোরে বলেন, "কার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে? ক্ষমতা গ্রহণের জন্য দরকার একটি জাতীয় পরিষদ। আমাকে বলুনতো দেশে জাতীয় পরিষদ আছে কি? কোনোমতেই বেআইনী ঘোষিত ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে ক্ষমতা দেয়া যাবে না।" তিনি আরো বলেন, দুষ্কৃতকারীরা (মুক্তিযোদ্ধা) এখনো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। নকশালী ও কমিউনিস্টদের দ্বারা পরিচালিত এসব দুষ্কৃতকারীরা জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করে বিশৃঙ্খল অবস্থা দীর্ঘায়িত করতে চায়।"

 

 

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ১৮ জুন গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল একটি দিন। এদিন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী লন্ডনে সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা আমাদের শিশু ও নারীদের খুন করেছে, আমাদের জনগণের ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট সমস্ত কিছু ধ্বংস করেছে; যারা আমাদের নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের আমরা কখনোই ক্ষমা করতে পারি না। আমরা কখনো তাদের অপরাধ ভুলে যেতে পারব বলে কি আপনি মনে করেন? নিশ্চয় না। এই গণহত্যার পর এই দেশের দুই অংশের একসঙ্গে থাকার আর কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, জাতি সম্পূর্ণ আলাদা। তবুও আমরা একসঙ্গে থাকার অজস্র চেষ্টা করেছি। এই পৈশাচিকতা, নৃশংসতা ও মানব ইতিহাসের সর্বনিকৃষ্ট গণহত্যার পর সেটা আর সম্ভব না। বাংলাদেশ এখন স্বাধীন রাষ্ট্র। এখন কেবল আমাদের কূটনীতি কেমন হতে পারে সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি।’

গোলাম আজমের বিবৃতি

১৮ জুন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আজম লাহোরে বলেন, ‘কার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে? ক্ষমতা গ্রহণের জন্য দরকার একটি জাতীয় পরিষদ। আমাকে বলুন তো দেশে জাতীয় পরিষদ বলে কোন কিছু আছে কি? কোনোমতেই বেআইনি ঘোষিত ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। ভারতের চর মুক্তিযোদ্ধারা এখনো ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। নকশালী ও কমিউনিস্টদের দ্বারা পরিচালিত এসব দুষ্কৃতকারীরা জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করে।’

ভারতে এদিন

১৮ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত কেন্দ্রীয় শিল্প উন্নয়ন মন্ত্রী মইনুল হক চৌধুরী সুইডেন, হল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও নরওয়ে সফর শেষে এদিন দেশে ফিরে এসে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ষাট লাখ শরণার্থীর জন্য সৃষ্টি হওয়া গুরুতর সমস্যার ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমাদের মিত্র দেশগুলো আমাদের বিষয়ে ইতিবাচক। এখনো বাংলাদেশের বিষয়ে রাজনৈতিক সমাধান আনা সম্ভব। বর্তমান সরকার পাকিস্তানকে বাংলাদেশে তাদের সামরিক কর্ম বন্ধ এবং রাজনৈতিক সমাধান চাওয়ার কথা বলেছে। পূর্ববঙ্গে চলমান গণহত্যা কেবল অভ্যন্তরীণ বিষয় নয় এটি এখন আন্তর্জাতিক সমস্যা। সবার জন্যই এটি ভীষণ উদ্বেগের বিষয়। আমরা ইউরোপীয় দেশগুলোকে অনুরোধ করেছি এই রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে ও ৬০ লক্ষ শরণার্থীকে নিরাপদে স্বদেশে ফিরবার নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য পাকিস্তানকে বাধ্য করতে হবে। আর সমাধান না হওয়ার পর্যন্ত পাকিস্তানকে সব ধরনের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা অবিলম্বে বন্ধ করতে। যেখানে তাদের প্রতিরক্ষার জন্য অস্ত্র দেওয়া হয়েছে তারা সেই অস্ত্র প্রয়োগ করেছে নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করার জন্য। পূর্ববঙ্গে গত বছর মর্মান্তিক ঘূর্ণিঝড়ের পরে ত্রাণ হিসেবে বিভিন্ন দেশের দেওয়া স্পিডবোট এখন সেনাবাহিনী নিরস্ত্র মানুষের উপর গণহত্যা চালানোর বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে।

১৮ জুন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি এক বিবৃতিতে ‘বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিতে দ্বিধা বোধ করায় এবং বিলম্ব করায় ভারত সরকারের কড়া সমালোচনা করে। তারা বলে, ভারত এখন আমেরিকা ও চীনের কাছে মাথা নত করে আছে। এটি চরম অপমানজনক ও কাম্য নয়। অথচ পূর্ববঙ্গ থেকে আগত ৫০ লাখের বেশি শরণার্থী ভারতে প্রবেশে বাধ্য হয়েছে। যার কারণে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও আসাম রাজ্যে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যার জন্য সরকার নিজেরাই দায়ী। এখনো পর্যন্ত তারা স্বীকৃতির প্রশ্নে অপারগ। পূর্ববঙ্গে ভারত সরকার কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাঠাতে এখনো অপারগ।’

দ্যা স্টেটসম্যান পত্রিকা এদিন ‘আমি তাদের ফেরত পাঠাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে বলা হয় ‘প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে ভারতের সংকল্পের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। অর্থনৈতিক সম্পাদকদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে মিসেস গান্ধী প্রধানত পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তুদের প্রবাহ ভারতের উপর ‘বোঝা’ হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেন। এত অল্প সময়ে এই বিশাল বোঝা বহন করা যেকোনো দেশের জন্যই কঠিন। মিসেস গান্ধী স্বীকার করেন ভারতের এই শরণার্থীদের জন্য বড় অংকের অর্থ খরচ করতে হবে। এগুলো পরিকল্পনা কমিশন ও অন্যান্য বিভাগের দ্বারা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার উপরও এটা নির্ভর করে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের মনোভাবে কোনো পার্থক্য আসবে না। শুরু থেকে ভারত একটি রাজনৈতিক নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে আসছে। ‘আমি নিশ্চিত যদি সব বিশ্বশক্তিগুলো চাপ দেয় তবে এটা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু মনে হয় সে আশা সুদূর পরাহত।’

পাকিস্তানে এদিন

১৮ জুন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার সুযোগ গ্রহণ করে নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যাবর্তন করার জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত পার হয়ে যে সকল এমএনএ এবং এমপিএ ভারতে চলে গেছেন তাদের দেশে ফেরার আহ্বান জানান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কন্যা বেগম আখতার সোলায়মান।

১৮ জুন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল দেশত্যাগী পাকিস্তানিদের প্রতি স্বদেশ ফিরে আসার আবেদন জানান।

১৮ জুন পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী, বিচারপতি নূরুল ইসলাম, ডেমোক্রেটিক পার্টির সহ-সভাপতি মাহমুদ আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কাজী দীন মোহাম্মদ ‘পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি’ হিসেবে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে সাক্ষাৎ করেন।

দেশজুড়ে গণহত্যা ও প্রতিরোধ যুদ্ধ: কান্দাপাড়া গণহত্যা

১৮ জুন রাজাকার কমান্ডার রজ্জব আলী ফকিরের নেতৃত্বে রাজাকারদের বড় একটি দল বাগেরহাটের কান্দাপাড়া বাজারে পৈশাচিক গণহত্যা চালায়। এই গণহত্যায় শহীদ হন ২৩ জন।

১৮ জুন, দিনটি ছিল শুক্রবার। দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে কান্দাপাড়া ও আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ জুমার নামাজ পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় রাজাকার কমান্ডার রজ্জব আলী ফকিরের নেতৃত্বে রাজাকারদের বড় একটি দল দুইভাগে ভাগ হয়ে একদল বাগেরহাট থেকে মুনিগঞ্জ খেয়া পার হয়ে বাগেরহাট-চিতলমারী সড়কপথে অগ্রসর হতে থাকে। অন্যপাশে আরেকটি দল ফকিরহাটের মুলঘর থেকে কুচিবগা খালের পথে আসে। রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা এসময় গ্রামে ও বাজারে ঢুকে যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী হিসেবে নাম লিখিয়েছিল তাদের বাড়িতে এসে হাজির হয়। তারা তাদের বাড়ি লুটপাট করে অভিযুক্তদের কান্দাপাড়া বাজারে আনে। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী দেলোয়ার হোসেন মাস্টার এবং ইব্রাহিম হোসেন মাস্টারকে বাড়িতে না পেয়ে তাদের বাড়ি গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে। অন্যদিকে রাজাকারদের আরেকটি দল ততোক্ষণে কদমতলা গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন সহযোগীদের কয়েকজনকে ধরে এনে। মোট ২৫ জনকে ধরে আনার পর তখন সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টারের নেতৃত্বে রাজাকারেরা ১৮ জন যুবক, তিন জন বৃদ্ধ ও দুই জন শিশুকে জবাই করে মাথা বিচ্ছিন্ন করে লাশের বুকের ওপর রেখে রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখে। ২৫ জনের মধ্যে মঞ্জুর মোল্লা সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে জান। আরেকজনের উপর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।