
২২ মে ১৯৭১ এই দিনে
* মুজাহিদ ক্যাপ্টেন আব্দুল হকের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর একটি গেরিলা দল কুমিল্লার শালদহ নদী এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। এই হামলায় 4 পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং 11 জন আহত হয়।
* সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসা বাংলাদেশি শরণার্থীর সংখ্যা ৩৩ লাখ ৭১ হাজার ৯শ ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে।

সীমান্ত গান্ধী’ হিসেবে পরিচিত খান আবদুল গাফফার খান
সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশের শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৩ লাখ ৭১ হাজার ৯ শত ৩১ জন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে ঘোষণা করা হয়, পাকিস্তানের উন্নয়ন কাজে অর্থনৈতিক সাহায্য অব্যাহত রয়েছে। এদিন পাকবাহিনী শরীয়তপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামে হত্যার তান্ডব চালায়। হানাদারেরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করে শরীয়তপুরের ৩৭০ জন নীরিহ শিশু ও নর-নারীকে।
‘সীমান্ত গান্ধী’ হিসেবে পরিচিত খান আবদুল গাফফার খান বলেন, বাঙালিরা জয় লাভ করেছে সারা পাকিস্তানের নির্বাচনে। এখন তাদের ওপর দোষারোপ করা হচ্ছে, তারা পাকিস্তান ভেঙে দিতে চায়। আরো বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের ৬ দফা কর্মসূচি পাকিস্তানের অখন্ডতার পক্ষে বিপজ্জনক। ৬ দফা যদি পাকিস্তানের সংহতির পক্ষে বিপজ্জনক হয়, তাহলে সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ কেন গোড়াতেই এর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেনি?
৬ দফার ওপর ভিত্তি করে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয় লাভ করেছে। এছাড়া ইয়াহিয়া খান যখন ঢাকা যান এবং শেখ মুজিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন তিনি মুজিব সাহেবকে পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী বলে ঘোষণা করেছিলেন। ৬ দফা যদি পাকিস্তানের সংহতির পক্ষে বিপজ্জনক হয় তাহলে এসব কথার অর্থ কী? আসল কথা হলো, মুজিব সাহেব নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন এবং তারই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবার কথা। সীমান্ত গান্ধী আরো বলেন, পাকিস্তানি জনসাধারণের কাছে আমি এ বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ সব সময়ই ধর্মের নামে আমাদের সঙ্গে হঠকারিতা করেছে। তারা ইসলামের কথা বলে, অথচ আজ পূর্ব বাংলায় যা ঘটছে তা কি ইসলাম ও পাকিস্তানের কল্যাণের জন্য করা হচ্ছে?

ভারতে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৪ লাখ
জামাতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মিয়া তোফায়েল নতুন করে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন দাবি করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আব্দুল গফুর বিএ-কে আহ্বায়ক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তি কমিটি গঠিত হয়। চট্টগ্রামের লালদিঘিতে এক জনসভায় নেজামে ইসলামের মহাসচিব মওলানা সিদ্দিক আহমদ বলেন, রাষ্ট্র বিরোধী ব্যক্তিদের তৎপরতা বন্ধ করার কাজে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করা শুধু শান্তি কমিটির দায়িত্ব নয়, এই দায়িত্ব প্রতিটি নাগরিকের।
রংপুরে সাবেক এমএনএ সিরাজুল ইসলাম ও সাবেক এমপিএ আব্দুর রহমান এক যুক্ত বিবৃতিতে সেনাবাহিনীকে সমর্থন দানের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।