৭১ এর এই দিনে | mssangsad.com

৭১ এর এই দিনে

৩১ মার্চ ১৯৭১ এই দিনে

* এ দিন শহরের মধ্যম নাথপাড়ায় পাকবাহিনীর সহযোগিতায় স্থানীয় বিহারিরা এ হত্যাযজ্ঞ চালায়। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় কুড়াল, কিরিচ আর রামদা দিয়ে কুপিয়ে ৪০ জন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল (ইপিআর) সদস্য এবং ৩৯ জন নাথপাড়াবাসীসহ ৭৯ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

* নাথপাড়ার শহীদ অনিল বিহারী নাথ, দুলাল নাথ ও বাদল নাথের পরিবারের লোকজন জানান, একাত্তরের ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে হালিশহর ইপিআর ঘাঁটি থেকে মেজর রফিকের নেতৃত্বাধীন ইপিআর বাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় দক্ষিণ হালিশহরের লোকজন নানাভাবে ইপিআর বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে পাক হানাদার বাহিনী। ২৯ মার্চ তারা বঙ্গোপসাগর উপকূল হয়ে দক্ষিণ কাট্টলীর ইপিআর ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হয়। পরদিন পাকবাহিনী নগরীর উত্তরে গহনা খাল এবং দক্ষিণে ইপিআর ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা ঘিরে ফেলে। সামান্য অস্ত্র নিয়ে ইপিআরের পক্ষে পাক বাহিনীকে মোকাবেলা করা সম্ভব  ছিল না। এ অবস্থায় অধিকাংশ ইপিআর সদস্য এলাকা ত্যাগ করলেও ৪০-৪২ জন মধ্যম নাথপাড়ার বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেসময় স্থানীয় বিহারিরা জল্লাদ শওকতের নেতৃত্বে ৩১ মার্চ দুপুর নাগাদ নাথপাড়ায় হত্যাকাণ্ড শুরু করে। প্রথমে বেছে বেছে তরুণ যুবকদের হত্যা করা হয়। এরপর বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। নারী ও শিশুদের আটকে রাখা হয় এক বিহারিদের ঘরে। পরে সেখান থেকে তাদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।

* একাত্তরের আজকের দিনে প্রায় সব ফ্রন্টে পাকিস্তানী বাহিনী আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করে সমন্বিত আক্রমণ চালায়। এতে পিছু হটতে বাধ্য হয় মুক্তিযোদ্ধারা। তবে, চুয়াডাঙ্গায় বাঙালি বীরসেনারা পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাস্ত করে। এ ঘটনা বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্যপক সাড়া ফেলে। অন্যদিকে, এদিন বাঙালির ওপর পাক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব পাস করে ভারতের মন্ত্রিসভা। এটা আন্তর্জাতিক মহলে পাক বাহিনীর নৃশংসতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে সাহায্য করে।